শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৫৬ অপরাহ্ন

রমজান নিত্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে মাঠপ্রশাসনে কঠোর নির্দেশনা

রমজান নিত্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে মাঠপ্রশাসনে কঠোর নির্দেশনা

স্বদেশ ডেস্ক:

রমজান মাসে নিত্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে মাঠপ্রশাসনে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সম্প্রতি বিভাগীয় কমিশনারদের সমন্বয় সভায় মন্ত্রিপরিষদসচিব মো: মাহবুব হোসেন এই নির্দেশনা দেন। নিত্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্যে খাদ্যমজুদ পরিস্থিতি, বাজার মনিটরিং এবং টিসিবি পণ্য বিতরণ কার্যক্রম সম্পর্কিত আলোচনা শেষে এই নির্দেশ দেয়া হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

এ সংক্রান্ত আলোচনায় আরো বলা হয়, খাদ্যশস্য নিয়মবহির্ভূতভাবে যাতে মজুদ না করতে পারে সে বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। নিত্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য বাজার মনিটরিং বৃদ্ধি করতে হবে। টিসিবির পণ্যের বিতরণ কার্যক্রম যথাযথ এবং সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে হবে। সিনিয়র সচিববাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং দেশের সব বিভাগীয় কমিশনার এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবেন।

সভায় সর্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত আলোচনা হয়। পেনশন স্কিমে গত ডিসেম্বর মাসে এক হাজার ১১৪টি এবং জানুয়ারি মাসে এক হাজার ২৭৭ জন রেজিস্ট্রেশন করেছে। এই সংখ্যা বৃদ্ধি করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

সভায় বলা হয়, বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডার কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে জানুয়ারি মাসে ১৩টি অভিযোগ পাওয়া গেছে এবং ছয়টি অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হয়েছে। জানুয়ারি ২০২৩ থেকে জানুয়ারি ২০২৪ পর্যন্ত ১৫১টি অভিযোগ পাওয়া গেছে এবং এই সময়ে ১৮৮টি অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হয়েছে।

বর্তমানে ৪৯টি অভিযোগ তদন্তাধীন রয়েছে। এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রাপ্ত অভিযোগের বিষয়ে এক মাসের ঊর্ধ্বে ঢাকা বিভাগে একটি করে, চট্টগ্রাম বিভাগে চারটি, রাজশাহী বিভাগে একটি, বরিশাল বিভাগে দু’টি, রংপুরে বিভাগে একটি করে মোট ৯টি অভিযোগ অনিষ্পন্ন রয়েছে। এসব অভিযোগ সংশ্লিষ্ট তদন্ত প্রতিবেদন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রেরণ নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেয়া হয়। তিন মাসের ঊর্ধ্বে ঢাকা বিভাগে দু’টি, চট্টগ্রাম বিভাগে চারটি করে, রাজশাহী বিভাগে তিনটি, খুলনা তিনটি করে, বরিশাল বিভাগে ১২টি করে, সিলেট বিভাগে একটি, রংপুর বিভাগে ৩টি করে, মোট ২৭টি অভিযোগ অনিষ্পন্ন রয়েছে। তিন মাসের ঊর্ধ্বে অনিষ্পন্ন অভিযোগের প্রতিবেদন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে দ্রুত প্রেরণের নির্দেশনা দেয়া হয়।

সভায় বলা হয়, আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিভাগ এবং মেট্রোপলিটন এলাকা থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী জানুয়ারি মাসে এক হাজার ৫০৫টি গুরুতর অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। ডিসেম্বর মাসের তুলনায় জানুয়ারি মাসে গুরুতর অপরাধ সংক্রান্ত মামলার সংখ্যা ১৫৪টি হ্রাস পেয়েছে।

বিভাগীয় কমিশনাররা জানান, কিছু রাজনৈতিক দলের হরতাল/অবরোধ কর্মসূচিতে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড, যেমন- রাস্তায় টায়ার জ্বালানো, বাস-ট্রাকে অগ্নিসংযোগ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ছাড়াও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমর্থকগণের মধ্যে ছোটখাটো কিছু ঘটনা ব্যতীত সব বিভাগের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদসচিব নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে সচেষ্ট এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং অপরাধ প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিভাগীয় কমিশনারদের নির্দেশনা প্রদান করেন।

জানুয়ারি মাসে ৬৮১টি টাস্কফোর্সের অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। ডিসেম্বর মাসের তুলনায় জানুয়ারি মাসে জেলা টাস্কফোর্স পরিচালিত চোরাচালানবিরোধী অভিযান ২০টি হ্রাস পেয়েছে। জেলা প্রশাসকদের চোরাচালানবিরোধী টাস্কফোর্স অভিযান জোরদারের নির্দেশনা দেয়া হয়। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে অভিযান জোরদার করতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটগণকে নির্দেশনা দিতে বিভাগীয় কমিশনারদের বলা হয়।

গত জানুয়ারি মাসে পাঁচ হাজার ৫০৪টি মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়েছে এবং ১০ হাজার ৯৬৮টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ডিসেম্বর মাসের তুলনায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সংখ্যা ১৯৯টি হ্রাস পেয়েছে এবং মামলার সংখ্যা ৪১টি হ্রাস পেয়েছে। যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণপূর্বক প্রয়োগসিদ্ধভাবে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা অব্যাহত রাখা এবং মোবাইল কোর্টের তথ্য ই-কোর্ট সিস্টেমে প্রত্যেক মাসের ৫ তারিখের মধ্যে আবশ্যিকভাবে আপলোড করতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটগণকে নির্দেশনা দিতে বলা হয়।

ফৌজদারি কার্যবিধি-১৮৯৮ এর আওতায় দায়েরকৃত মামলাগুলো পর্যালোচনা করা হয়। জানুয়ারি মাসে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঁচ হাজার ৪১৮টি মামলা রজু হয়েছে এবং সাত হাজার ৩২৩টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। বর্তমানে অনিষ্পন্ন পুঞ্জীভূত মামলার সংখ্যা ৩২ হাজার ৯৯৯টি।

ডিসেম্বর মাসের তুলনায় জানুয়ারি মাসে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিষ্পত্তিকৃত মামলার সংখ্যা ৬৭৪টি হ্রাস পেয়েছে। একই সময়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজেস্ট্রেট আদালতে পাঁচ হাজার ৭৭১টি মামলা রজু হয়েছে এবং নিষ্পত্তি হয়েছে পাঁচ হাজার ২১০টি। বর্তমানে অনিষ্পন্ন পুঞ্জীভূত মামলার সংখ্যা ৩৯ হাজার ৯৮০টি।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877